পরকীয়ার দায়ে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত পুলিশ সুপার নিহার রঞ্জন হাওলাদারকে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যে অভিযোগের ফজলুল হক নামের আরেক পুলিশ কর্মকর্তাকেও শাস্তি দেওয়া হয়েছে।রবিবার (২ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত আলাদা দুই প্রজ্ঞাপনের আদেশে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই দুই কর্মকর্তার শাস্তি দেওয়া হয়। গত ২২ জুন ওই প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও ঈদের ছুটি শেষে তা রবিবার(২ জুলাই)প্রকাশিত হয়।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়,সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার থাকাকালে এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন নিহার রঞ্জন। তার স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১০ সালে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়। পরে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে সদাচারণের অঙ্গীকার করেন।
এরপরেও তিনি আবার পুলিশের এক নারী পরিদর্শকসহ একাধিক পরকীয়ায়’জড়িয়ে পড়েন।তাদের মধ্যে ফোনে কথোপকথন,ক্ষুদেবার্তা আদান-প্রদান,তিনি তার কর্মস্হলে থাকাকালীন ৮৪ দিনের মধ্যে অনুমতিতে ১৮ দিন ও অননুমোতিতে ৫৮ দিন সহ মোট ৭৬ দিন কর্মস্থলের বাইরে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার দক্ষিণ সোনাখালীর নিজ বাড়িতে থাকা ও ভুয়া ট্যুর ডায়েরি দাখিল করার প্রমাণ পাওয়ায় নিহার রঞ্জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।এতে আরও বলা হয়েছে, প্রথম দফায় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব না দেওয়ায় নিয়মানুযায়ী একজন অতিরিক্ত ডিআইজিকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণিত হয়। এরপর দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজ-পত্র পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়।একই দিন আলাদা প্রজ্ঞাপনে রাজশাহীতে র্যাব-৫ এ পুলিশ সুপার থাকাকালে ২০২১ সালের ১৯ মে রাজশাহী মহানগর পুলিশে কর্মরত এক কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ,অশালীন ও শিষ্ঠাচার বহির্ভূত স্পর্শকাতর’ ফোনালাপ করেন,যা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়,এ ঘটনায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হলে একই বছর ৬ ডিসেম্বর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ব্যক্তিগত শুনানি ও দালিলিক প্রমাণ পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।এরপর তদন্ত কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন এবং নিয়ম অনুযায়ী পর্যালোচনা শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হয়।এসব কারণে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি-৪(৩) এর উপ-বিধি (১)(ক) অনুযায়ী আগামী তিন বছরের জন্য ‘নিম্নপদে অবনমিতকরণ’ গুরুদণ্ড প্রদান করা হয় বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।