বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হযরত খান জাহান আলী (রহ:) এর মাজার সংলগ্ন দিঘীতে থাকা দুটি কুমিরের মধ্যে পুরুষ কুমিরটি মারা গেছে।বৃহস্পতিবার (অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রশাসনের নির্দেশে দিঘী থেকে কুমিরের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।এর আগে দুপুরের দিকে দিঘীর দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে বড় পুরুষ কুমিরটির মরদেহ স্হানীয়রা ভাসতে দেখেন। এই খবর পেয়ে পুলিশ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ,খাদেমসহ দর্শনার্থীরা মাজার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। কুমিরের মৃত্যুর কারণ জানতে ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. লুৎফর রহমান।এদিকে দিঘীর কুমিরের মৃত্যু নিয়ে খাদেম, ফকির ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।কুমিরটিকে চেতনা নাশক ও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দীর্ঘদিন এক পাড়ে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন অনেকে।ফকির দারা নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, এখানে কুমিরকে ঘুমের বড়ি খাইয়ে বশ করা হয়।শেষ ৫/৬ মাস ধরে এই কুমির দিঘীর দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ের দিঘি সংলগ্ন এফ এম মোস্তফা ফকিরের বাড়ির পুকুরে ছিল।আর দীর্ঘদিন কুমির এক জায়গায় থাকে না। কুমিরটিকে ওষুধ দিয়ে মাজার ব্যবসায়ীরা জন্য আটকে রেখেছিল।মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, কুমিরগুলো আসলে দিঘীর প্রাণ ছিল।কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এই কুমিরকে টাকা কামানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতেন।কুমিরকে নিজ এলাকায় আটকে রেখে দর্শনার্থী ও ভক্তদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো।৬/৭ মাস ধরে কুমিরটিকে একজনের বাড়ির পুকুরে আটকে রাখা হয়েছিল।এতদিন ধরে কুমির এক জায়গায় থাকে না। আমরা এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগও করেছি। এই কুমিরটিকে মেরে ফেলা হয়েছে।কুমিরের মৃত্যুর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন এই খাদেম।প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. লুৎফর রহমান বলেন, কুমিরটি তিন বছর আগেও একবার অসুস্থ্য হয়েছিল।তখন আমরা চিকিৎসা দিয়েছিলাম।এর পরে মোটামুটি ভাল ছিল। আমরা কুমিরের মরদেহের ময়না তদন্ত করবো।মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করব।বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।মাদরাজ থেকে আনা দুটি কুমিরের পুরুষ কুমিরটি মারা গেছে।এখানে খাদেমদের অভিযোগ রয়েছে, আমরা তদন্ত করছি।এছাড়া কুমিরের ময়না তদন্ত করা হবে।ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।