পিরোজপুর প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের কাউখালীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষন চলাকালীন রিসোর্স সেন্টারের প্রশিক্ষনার্থীদের বসার চেয়ার ভেঙ্গে পড়ে গিয়ে পদ্মা রানী দত্ত নামে এক প্রধান শিক্ষক আহত হয়েছে।তিনি কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।আহত পদ্মা রানী দত্ত ৩৪ নং সুবিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল ) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাউখালী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে প্রশিক্ষন চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।
প্রশিক্ষনার্থী শিক্ষকরা জানান, মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কচুয়াকাঠিতে রিসোর্স সেন্টারে ৬ দিন ব্যাপী উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষক "একত্রীভূত করনের কৌশল: শিখন - শেখানো এবং মুল্যায়ন" শীর্ষক প্রশিক্ষন শুরু হয়।ওই প্রশিক্ষন চলাকালীন সময়ে হঠাৎ ৩৪ নং সুবিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ্মা রানী দত্ত চেয়ারে বসতে গিয়ে চেয়ার ভেঙ্গে পড়ে আহত হন। এসময় অন্য শিক্ষকগন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।সহকারী শিক্ষক স্বপন বিশ্বাস বলেন, রিসোর্স সেন্টারে প্রশিক্ষন চলাকালীন সময়ে আজ প্রধান শিক্ষক পদ্মা রানী দত্ত চেয়ার ভেঙ্গে পড়ে গিয়ে শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।কিন্তু এখানে শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত ট্রেনিংয়ে আসলে ইউআরসি ম্যাডাম কর্তৃক মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন।শিক্ষকদের সাথে বাজে ব্যবহার করা ওনার একটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। এর প্রতিকার হওয়া উচিত।আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
প্রধান শিক্ষক আল মামুন বলেন, কাউখালী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের অব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিনের। এর আগেও সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীরা ভাঙ্গা, জোড়াতালি দেওয়া চেয়ার থেকে একাধিকবার পড়েছেন। নোংরা পরিবেশে বছরের পর বছর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলে আসছে। এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া যায় না!এ বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুব্রত রায় বলেন, কাউখালী রিসোর্স সেন্টারে প্রশিক্ষণ গ্রহন ও প্রদানের সম্পূর্ন অনুপযোগী।এখানের ভৌত অবকাঠামো, আসন ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় আলো বাতাস, স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট, প্রয়োজনীয় ডিজিটাল উপকরণের কোনটাই নাই।তবুও শিক্ষকগন জীবনের ঝুকি নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বছরের পর বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছেন।এ সব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মাহাফুজা খানম শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে অসাধাচরণ করে থাকেন।রিসোর্স সেন্টারের এই দূর অবস্হা দ্রুত সমাধানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিষয়টি স্বীকার করে রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মাহাফুজা খানম বলেন, রিসোর্স সেন্টারের ভবনটি ২০০৭ সালে নির্মাণ করা হয়।তখন ভবন নির্মাণের সময় ঠিকাদার আসবাবপত্র সরবরাহ করেন।এর পর এখন পর্যন্ত এই রিসোর্স সেন্টার কোন নতুন আসবাবপত্র সরবরাহ করা হয়নি।ওই পুরাতন চেয়ার টেবিল গুলোই মেরামত করে ব্যবহার করছি।ভবননে এখনও আমরা ব্যবহার করছি।ভবনের ভৌত অবকাঠামো ও আসবাবপত্রের জন্য কয়েক বার উপজেলা প্রকৌশলী ও আমার উধ্বর্তন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি।আশা করছি এ বাজেট বরাদ্দ পাব।তিনি শিক্ষকদের সাথে অসাধাচরনের বিষয়ে বলেন, প্রশিক্ষন চলাকালীন সময়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে বা প্রশিক্ষনে আসতে দেরি করলে সে বিষয়ে তাদের কাছে এর কৈফিয়ত চাওয়া হয়।এছাড়া তাদের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করা হয়নি।