নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে আতঙ্কের নাম ১৫ মামলার আসামি কানা জহির। বাল্কহেড থেকে বিট তোলার মধ্য দিয়ে উত্থান তার। তবে এখন নদীপথে সব ধরনের অপকর্মে জড়িত কানা জহিরের নাম। হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুই ডজন মামলা থাকলেও তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী অনেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামের মাহমদ মিয়ার ছেলে জহির ইসলামের কথা। জন্ম থেকে তার ডান চোখ অন্ধ হওয়ায় সেখান থেকে তার নাম হয় কানা জহির। সবাই তাকে এ নামে চেনেন। গজারিয়া, বেলতলী, চর আব্দুল্লাহ ও মোহনপুর পুলিশ ফাঁড়ির আশপাশে চলে তার অপকর্ম। মাদক বেচাকেনা, চাঁদাবাজি, চুরি-ডাকাতি ও মেঘনা নদীতে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ সব ধরনের অপকর্ম করে। জহির মেঘনা নদীর গজারিয়া, বকচর ও ষাটনল থেকে শুরু করে মোহনপুর পর্যন্ত ওই পথে চলাচলকারী বাল্কহেড থেকে পুলিশের নাম করে ‘বিট’ তোলে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ইজারা নেওয়া বালুমহালের পাশে জোর করে বালু উত্তোলন করে। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই চলে নদীপথে গোলাগুলি। মূলত তার ভয়ংকর রূপ চোখে পড়ে রাতে। জহির একা নয়, তার একটি বাহিনী রয়েছে। জহির, তার ছোট ভাই এবং বাহিনীর অন্য সদস্যরা নদীপথে সব ধরনের অপকর্ম করে। পুলিশের অভিযান ও নজরদারির অভাবে রাতে মাদক, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নৌযানে ডাকাতি করে।মুন্সীগঞ্জের কালিরচর থেকে শুরু করে কালিপুর-ষাটনল, নাসিরাচর হয়ে মোহনপুর পর্যন্ত ডাকাতি এবং মাদক সরবরাহ করে কানা জহির বাহিনী। জহিরের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করে তারই ভাই আঙুল কাটা শাহিন। সশস্ত্র শাহিন ও জহির ডাকাত দিনের বেলা অবস্থান করে কালিরচরের আশপাশের এলাকায়। বকচর থেকে কালিরচর পর্যন্ত শাহিনের ও কালিরচর থেকে নাসিরাচর ও মোহনপুর জহিরের অপরাধের স্বর্গরাজ্য।জানা গেছে, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে জলদস্যু কানা জহির চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মোহনপুর এলাকায় তার দলবল দিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে অভিযান চালায় চাঁদপুরের নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড। এ সময় ডাকাত জহিরের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোলাগুলি হয়। এক পর্যায়ে কানা জহির পুলিশের আক্রমণে টিকতে না পেরে অস্ত্র, স্পিডবোট এবং গোলাবারুদ রেখে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।স্থানীয় সূত্র জানায়, এ ঘটনার রেশ না কাটতেই পরের দিন সকালে ডাকাত কানা জহির তার দলবল নিয়ে মুন্সীগঞ্জ সদরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে এক ব্যবসায়ীর স্পিডবোট ছিনতাই করে। বিষয়টি অবগত করার পরও পুলিশ এখন পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীর স্পিডবোট উদ্ধার করতে পারেনি।অভিযোগ রয়েছে, ২১ ডিসেম্বর সকালে বকচর এলাকায় ইজারা দেওয়া বালুমহালে এসে চাঁদা দাবি করে কানা জহির। ড্রেজারে থাকা লোকজন কানা জহিরকে চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় নদীতে থাকা তিনটি ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেয়।