নাসিম উদ্দীন ভেড়ামারা প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ফিরোজ আলম (৩২) নামে এক যুবক। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত আনুমানিক ৯টা ৩০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ফিরোজ আলম কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা, তার পিতার নাম কামাল হোসেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ আলম ভেড়ামারা শহর থেকে নিজ বাড়ি বাহাদুরপুরে যাচ্ছিলেন একটি অটোযানে করে। পথিমধ্যে ভেড়ামারা-বাহাদুরপুর সড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির দশ চাকার ড্রাম ট্রাক অটোটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষের তীব্রতায় ফিরোজ গাড়ি থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান এবং তখনই ট্রাকের পেছনের চাকা তার ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পর নিহতের মাথার অংশ প্রায় ৩০ ফুট রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, যা ছিল অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও বিভীষিকাময় দৃশ্য।দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং ট্রাকটিকে থামানোর চেষ্টা করলেও চালক দ্রুত পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই অতিরিক্ত মালবোঝাই ট্রাক এবং দ্রুতগতির যানবাহনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বড় ট্রাক চলাচল করে, যার ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।বাহাদুরপুর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিনই আমরা আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করি। এই সড়কে যেন রাত হলেই মৃত্যু ঘোরে। ফিরোজ আমাদের গ্রামের শান্ত-শিষ্ট ছেলে ছিল। তার এভাবে চলে যাওয়া কেউ মেনে নিতে পারছে না।”একইসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে আব্দুল করিম নামে আরেকজন বলেন, “সড়কে কোনো নজরদারি নেই। বারবার বলার পরও ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত হয়নি। প্রশাসন যদি আগে ব্যবস্থা নিত, তাহলে হয়তো আজ ফিরোজকে হারাতে হতো না।” এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তারিকুল ইসলাম বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক ট্রাক এবং চালককে শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে আশপাশের থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সড়কে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া না হলেও, প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।