পিরোজপুরের কাউখালীতে গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নারী কর্মী নিয়োগে উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী মো: সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও রয়েছে তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ। জানাযায়, কাউখালীতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট এলাকার অসহায় ও হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের লক্ষে মাইকিং ও প্রচার প্রচারনার মধ্যে স্হানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যাচাই বাছাই করে উপযুক্তদের ১ বছরের জন্য (১৮-৪০ বছর বয়সী) মহিলা কর্মী নিয়োগ দেওয়ার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী গ্রামীণ সড়ক নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে এলসিএস নারী কর্মী নিয়োগের জন্য প্রচার প্রচারনা মাধ্যমে আগ্রহীদের একটি নির্দিষ্ট তারিখ ও স্হানে স্কুল বা উপজেলা পরিষদে হাজির করে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও এনজিও প্রতিনিধি স্বাক্ষাতকার নিয়ে কর্মী বাছাই করবেন । পরে যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলা প্রকৌশলী তাদের নিয়োগ প্রদান করবেন। সেখানে উপজেলা প্রকৌশলী মো: সাখাওয়াত হোসেন কোন প্রকার মাইকিং বা প্রচারপ্রচারনা ছাড়াই তার নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী নীতিমালা বিধিবহির্ভূত ভাবে ১৫ জন নারী কর্মী ও ১ জন সুপারভাইজার নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। এই নারী কর্মী নিয়োগর একটি তালিকা উপজেলা পরিষদের থাকার নিয়ম থাকলেও এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, এমনকি নিজ দপ্তরের কর্মকর্তারাও কোন কিছুই জানেন না বলে তার জানান। এছাড়াও প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন উপজেলার বিভিন্ন কাজের ঠিকাদারদের কাছ থেকে জামানতের টাকা উত্তোলনের সময় ১০% এবং চলমান বিলের জন্য ২% টাকা দাবি করেন বলে ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন।তার দাবিকৃত টাকা না দিলে তিনি ওই সকল ঠিকাদারের বিল বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আটকে রাখেন। এবিষয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধি ও প্রকৌশলীর কথোপকথনের ওডিও ক্লিপ প্রতিনিধির কাছে রয়েছে।
এলসিএস প্রকল্পে নিয়োগ প্রাপ্ত নারী কর্মীরা বলেন, আমরা মেম্বার চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে শুনে অনলাইনে আবেদন করে নিয়োগ পেয়েছি। উপজেলা অফিস থেকে আমাদেরকে কাজের জন্য বলেছে। এবিষয়ে আমাদের এলাকায় কোন মাইকিং শুনিনি। এবিষয়ে ১নং সয়না রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ, ২নং আমরাজুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন ও ৩নং সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুনেছি আমাদের ইউনিয়নে গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য নারী কর্মী নিয়োগ দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন। এবিষয়ে এলাকায় কোন মাইকিং বা কোন প্রচার প্রচারনা করা হয়নি।এমনকি আমাদের সাথেও আলোচনা না করেই তিনি তার একক সিদ্ধান্তে তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন। নারী কর্মী বাছাই কমিটির সদস্য উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার হাদিয়া বলেন, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজের নারী কর্মী নিয়োগ হয়েছে কি তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে আমাকে কোন কিছুই জানানো হয়নি। এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিঞা বলেন, এর আগে তিনি বছরের জন্য গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নারী কর্মী নিয়োগের লক্ষে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিং করে উম্মুক্ত লটারির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। শুনেছি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ওই সব এলাকায় ১ বছরের জন্য গ্রামীন সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন একক সিদ্ধান্তে ১৫ জন নারী কর্মী ও ১ জন সুপারভাইজার নিয়োগ দিয়েছে । এবিষয়ে তিনি উপজেলা পরিষদকে অবহিত করেননি। এই প্রকৌশলী সব সময় নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে থাকেন। তিনি উপজেলা পরিষদকে কোন কিছুই অবহিত করেন না। তিনি ঘুষ ছাড়া কোন কাজেই করেন না। উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে পূর্বের বাছাইকৃত অপেক্ষমান তালিকা থেকে ১ বছরের জন্য ৩ টি ইউনিয়নের ৩ টি রাস্তার জন্য ১৫ জন এলসিএস নারী কর্মী ও ১ জন সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম করা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে আনা ঘুষের অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।